২১শে আগস্টের গ্রেনেড হামলার প্রতিবাদে জাবি ছাত্রলীগের মোমবাতি প্রজ্জ্বলন ও বিক্ষোভ সমাবেশ

মাহমুদুল হাসান (জাবি প্রতিনিধি) :
গতকাল ২১ আগস্ট (রোববার) ইতিহাসের সেই রক্তস্নাত ভয়াবহ বিভীষিকাময়, বর্বরোচিত ও বীভৎস হত্যাযজ্ঞের আঠারোতম বার্ষিকী। হামলায় নিহত শহীদদের স্মরণে হামলাকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে মোমবাতি প্রজ্জ্বলন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়(জাবি) ছাত্রলীগ৷
রবিবার (২১শে আগস্ট) রাত ১২টা ১ মিনিটে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে সাধারণ শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দের উপস্থিতিতে নিহত শহীদদের স্মরণে মোমবাতি প্রজ্জ্বলন করা হয়।
২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সামনে সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও দুর্নীতিবিরোধী সমাবেশ করে আওয়ামী লীগ।
শেখ হাসিনার বক্তৃতা শেষ হতে না হতেই শুরু হয় ইতিহাসের নৃশংস,জঘন্যতম হত্যাযজ্ঞের। মাত্র দেড় মিনিটে ব্যবধানে ১৩টি গ্রেনেডের বিস্ফোরণ হয় সমাবেশ স্থলে।
২১ আগস্টের সেই দিনে আওয়ামী লীগের শীর্ষস্থানীয় নারী নেত্রী ও প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের সহধর্মিণী আইভি রহমান সহ অনেক নেতা-কর্মীরা গ্রেনেডে আঘাতে তাৎক্ষণিক গুরুতর আহত হন।অনেকেরই হাসপাতালে নেওয়ার পথে মৃত্যু হয়। মোট ২৪ জন এই হামলার ঘটনায় নিহত হন।এছাড়াও আহত হন দল ও সংগঠনের কয়েকশ নেতাকর্মী-সমর্থক।
এ ঘটনায় মামলা করে আওয়ামী লীগ। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার ছেলে তারেক জিয়া, চারদলীয় জোট সরকারের সাবেক উপমন্ত্রী ও বিএনপি নেতা আব্দুস সালাম পিন্টু, হরকাতুল জিহাদ প্রধান মুফতি হান্নান ও সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরসহ ৫২ জনকে আসামি করা হয়।
জাবি শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান লিটন বলেন, ‘২১শে আগস্ট ২০০৪ সালে তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেত্রী বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে জনসভায় গ্রেনেড হামলার কুশীলব, মদদ দাতা ও মাস্টার মাইন্ড তারেক রহমানসহ জড়িত সবাইকে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।’
২১ আগস্টের ভয়াবহ দিনের ঘটনাকে স্মরণ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আকতারুজ্জামান সোহেল বলেন, ‘২১শে আগস্টের গ্রেনেড হামলা তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা এবং বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার পরিকল্পনা নিয়ে আওয়ামী লীগকে নেতৃত্বশূন্য করার লক্ষ্যে এ হামলা চালানো হয়েছিল। এ হামলার সাথে প্রত্যক্ষভাবে তারেক রহমানসহ বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের নেতৃবৃন্দরা জড়িত ছিল। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উদ্যোগে তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।’
আওয়ামী লীগকে নেতৃত্ব শূন্য করতে বিএনপি-জামায়াত তথা চার দলীয় জোট সরকার রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করে ইতিহাসের নৃশংসতম এ গ্রেনেড হামলা চালায়। আসামিদের মধ্যে লুৎফুজ্জামান বাবর এবং আব্দুস সালাম পিন্টুসহ অনেকেই বর্তমানে কারাগারে বন্দী। রায় ঘোষণার সময় তারেক রহমান এবং হারিছ চৌধুরীসহ ১৮ জনকে মামলার নথিতে পলাতক দেখানো হয়েছিল।সর্বশেষ পলাতক আছেন ১৫ জন। এরমধ্যে অন্তত ৯ জন বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অবস্থান করছেন বলে জানা যায় ।