স্বপ্নের পদ্মাসেতুঃ বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার সাহসিকতাপূর্ণ এবং বিচক্ষণ নেতৃত্ব

স্বপ্নের পদ্মাসেতুঃ বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার সাহসিকতাপূর্ণ এবং বিচক্ষণ নেতৃত্ব

মোঃ শামছুল আরেফিন রুমী

প্রথমেই গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু ‍শেখ মুজিবুর রহমানকে। পদ্মাসেতু এদেশের মানুষের আজন্ম লালিত স্বপ্নময় এক নাম। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে আরও একটি বিজয়, স্বপ্নের পদ্মাসেতু শুধুমাত্র আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার সাহসিকতাপূর্ণ এবং বিচক্ষণ নেতৃত্বের ফসল । ২০২০ সালে জনপ্রিয় ফোর্বস ম্যাগাজিনে বিশ্বের ক্ষমতাধর নারীদের তালিকায় আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা ৩৯তম স্থানে স্থান পান এবং সেখানে আরও বলা হয়েছে ”বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে দীর্ঘসময় ধরে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বে থাকা শেখ হাসিনা এই মেয়াদে খাদ্য নিরাপত্তা এবং জনগণের শিক্ষা ও স্বাস্থ্য সেবা প্রাপ্তিতে গুরুত্ব দিচ্ছেন।” সারা বিশ্বে যখন করোনাভাইরাস মহামারীতে অর্থনৈতিকসহ সকল বিষয় খুব খারাপ অবস্থা বিরাজমান, ঠিক তখন এই সময়ে বাংলাদেশের মতো একটি প্রাকৃতিক দুর্যোগের দেশের অর্থনীতি অবস্থা  বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার সাহসিকতাপূর্ণ এবং বিচক্ষণ নেতৃত্বের মাধ্যমে ক্রমেই সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতেও বাড়ছে আমাদের রেমিটেন্স এবং বৃদ্ধি পেয়েছে আমাদের মাথাপিছু জিডিপির হার এছাড়াও দ্রুত কাজ হচ্ছে মেগা প্রজেক্টগুলো   এসব উন্নয়নের  একমাত্র কারিগর মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা।
সকলের জানা যে ’ভিশন-২০৪১’ হল ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে বিশ্বের দরবারে একটি উন্নত দেশে রূপান্তর করা আর এটিই হল আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একমাত্র মূল লক্ষ্য। আর সেই লক্ষ্য পূরণের জন্য তিনি কাজ করে যাচ্ছেন যার জলন্ত উদাহরন পদ্মাসেতু। এছাড়াও রয়েছে অনেক মেগা প্রকল্পসসমূহ যেমন- মেট্রোরেল প্রকল্প,  রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্প, মাতারবাড়ী কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্প, এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণ প্রকল্প, কয়লাভিত্তিক রামপাল থার্মাল বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্প, পায়রা গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণ প্রকল্প।  স্বপ্নের এই পদ্মা সেতু নির্মাণ এর মধ্য দিয়ে আমাদের দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা সহ সকল ক্ষেত্রে আরও বহুগুনে উন্নত হবে এবং  আশার আলো দেখে বাচতে শিখবে এদেশের কোটি কোটি মানুষ।  বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি ছিল পদ্মাসেতু নির্মাণ যা কোটি কোটি মানুষের অনেক দিনের স্বপ্ন ও প্রানের দাবি ‍সেটা পূরণ করা । আর আজ ২৫ জুন ২০২২ ‍সেই স্বপ্ন পুরনের দিন ।  এটি ছিল এদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক, প্রযুক্তিগত ও অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলামূলক উন্নয়ন প্রকল্প। আর এই উন্নয়নমূলক প্রকল্পটি সফলতা ‍শুধুমাত্র বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার সাহসিকতাপূর্ণ এবং বিচক্ষণ নেতৃত্বের জন্য। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, নিজস্ব অর্থায়নের মাধ্যমেই পদ্মাসেতুর ‍সফলতা।
“আমার টাকায় আমার সেতুবাংলাদেশের পদ্মা সেতু” 
শুধু একারনেই আজ আমাদের প্রতি বিশ্বাবাসীর দৃষ্টিভঙ্গীর অনেক পরিবর্তন সাধিত হয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আরও বলেছিলেন ”পদ্মাসেতু নির্মাণটা আমাদের জন্য একটা চ্যালেঞ্জ এবং অনেকেরই এমন ধারণা ছিল বিশ্বব্যাংকের সাহায্য ছাড়া আমরা এটা নির্মাণ করতে পারবো না। কিন্তু আমি বলেছি আমরা পারবো এবং আমরা করে দেখাবো। আমরা মিথ্যা অভিযোগ কেন মাথা পেতে নেব। এটা সত্য যে এরফলে আমাদের অনেক সমস্যা পোহাতে হয়েছে তা স্বত্বেও আমরা চ্যালেঞ্জটা গ্রহণ করেছি।” আর তারই সফলতার দিন আজ ২৫ জুন শুভ উদ্বোধন পদ্মাসেতুর, মনে হচ্ছে এ যেন আর ও একটি স্বাধীনতা।
নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মাসেতু নির্মাণ অবশ্যই আমাদের দেশের অর্থনীতির সক্ষমতা অর্থাৎ অর্থনীতিকে ইতিবাচক দিক নির্দেশ করে থাকে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার এই সৎ সাহসকে ‍ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই কারন তার সৎ সাহসের জন্যই আজকের পদ্মাসেতুর শুভ উদ্বোধন।  বঙ্গবন্ধু একাত্তরে দেশের স্বাধীনতার এনে দিয়েছিলেন, তার ‍সেই সৎ সাহসিকতাপূর্ণ নেতৃত্বের কারনে আমরা পেয়েছি আজকের এই সোনার বাংলাদেশ। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা যিনিও তার বাবার কাছ থেকে শিখেছিলেন এবং  তাঁর দৃঢ় মানসিকতার কারনে আজকের এই পদ্মাসেতু প্রতিফলিত হয়েছে। স্বপ্ন পুরন হল এদেশের কোটি কোটি  মানুষের।  পদ্মা সেতু নির্মাণের ফলে দেশের দক্ষিন-পশ্চিম অঞ্চলের সাথে উত্তর-পূর্ব অংশের মানুষের সাথে যোগাযোগ ব্যবস্থা আরও অনেক উন্নত হবে, ও তাদের মাঝে বন্ধনবৃদ্ধি পাবে।  কারন একটি দেশের উন্নয়নের জন্য পরিবহন ও যোগাযোগ ব্যবস্থাও খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। যেকোনো দেশের সরকারের মূল লক্ষ্যই হলো দেশের অর্থলৈতিক ও সামাজিক অবস্থার উন্নত করা যাতে দেশকে বিশ্বের অন্য দেশের কাছে মুখাপেক্ষী হতে না হয়। একই সাথে দারিদ্র বিমোচন করা আর সেই লক্ষ্য পূরনের জন্য আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কাজ করে যাচ্ছেন। আমাদের প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলেন পদ্মাসেতুর একমাত্র রূপকার । সুতরাং, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন, শুভেচ্ছা ও সমর্থন  জানানো এদেশের মানুষের নৈতিক দায়িত্ব, যাতে করে এদেশকে উন্নয়নের পরবর্তী স্তরে নিয়ে গিয়ে কোটি কোটি মানুষের ‍স্বপ্ন করে উপহার দিতে পারেন এক উন্নত বঙ্গবন্ধুর সোনার  বাংলাদেশ। 

লেখক: লেকচারার, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।

Share This Post