শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকদের বলপূর্বক ‘বই কেনানোর’ চেষ্টা

রাজধানীর মিরপুরের ঢাকা কমার্স কলেজের শিক্ষকদের বিরুদ্ধে জোর করে বই কেনানোর অভিযোগ উঠেছে। দীর্ঘদিন ধরে কতিপয় শিক্ষক ছাত্রছাত্রীদের কে দিয়ে তাদের নিজেদের লেখা বই কিনতে চাপ প্রয়োগ করে আসছেন এবং বল প্রয়োগ করছেন। যার ফলে আর্থিকভাবে দুর্বল অভিভাবকদের সমস্যায় পড়তে হচ্ছে।
উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে উৎপাদন ব্যবস্থাপনা ক্লাসে কলেজের মার্কেটিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক শনজিত সাহা শিক্ষার্থীদের চাপ দিচ্ছেন অনেকদিন থেকে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী বলেন,আমি কলেজে ভর্তি হওয়ার পরে ক্লাসে অন্য লেখকের বই কেনা হয়েছে এরপর সেকশন চেঞ্জ হওয়াতে নতুন করে শনজিত সাহা স্যার আমাদের ক্লাস নিচ্ছেন। এখন তিনি বলছেন তার লেখা বই অবশ্যই কিনতে হবে না হলে ক্লাসে ঝামেলা করছে এবং যাচ্ছে তাই ব্যবহার করছেন।
এমন অভিযোগ একই কলেজের ফিনান্স বিভাগের আকতার হোসেন এর বিরুদ্ধে। তিনি ক্লাসের চাইতে বইয়ের দিকে মনোযোগ বেশি দেন। সবার হাতে তার লেখা বই আছে কিনা সেটা আগে নিশ্চিত করেন তারপর পড়ানো শুরু করেন। একই কলেজের বাংলা বিভাগের পার্থ বাড়ৈ ও তার লেখা বাংলা বই কিনতে বাধ্য করেন শিক্ষার্থীদের। ইংরেজি বিভাগের সমিরন এবং ফয়সাল নামে দুই শিক্ষক একই অভিযোগে অভিযুক্ত। এরপর আছেন আইসিটি ডিপার্টমেন্ট এর আব্দুর রহমান।
এর প্রেক্ষিতে কলেজ প্রশাসন ০৭ মার্চ,২০২৩ এক অফিস বিজ্ঞপ্তিতে বই ক্রয়ের জন্য শিক্ষার্থীদের চাপ বা বাধ্য করার চেস্টা থেকে বিরত থাকার জন্য নির্দেশ জারী করেছেন।
অধ্যক্ষ আবু মাসুদ সাক্ষরিত এক অফিস আদেশে বলা হয়, কলেজ কতৃপক্ষের কাছে এই মর্মে অভিযোগ আয়াছে যে, ঢাকা কমার্স কলেজের কোন কোন শিক্ষক তাদের নিজেদের লেখা অথবা বিশেষ কোন লেখকদের লেখা বই ক্রয়ের জন্য শিক্ষার্থীদের চাপ প্রয়োগ করছেন/ বাধ্য করার চেস্টা করছেন। শিক্ষকদের এ ধরনের গর্হিত কর্মকান্ড থেকে বিরত থাকার জন্য নির্দেশ দেয়া হলো। বিষয়টি অতীব গুরুত্বপূর্ণ। শুধু কমার্স কলেজ নয় একই অভিযোগ মনিপুর স্কুল এন্ড কলেজের বাংলা শিক্ষকের বিরুদ্ধে ও। তিনি তার লেখা ব্যকরণ বই কিনতে প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে বাধ্য করছেন। দিনের পর দিন অভিভাবকদের উপর এমনিতেই খরচের চাপ তার ওপর একাধিক বই কেনা আরও বড় চাপ বলে মনে করছেন অনেকেই। শিক্ষার্থীদের উপর এমনিতেই পড়ালেখার খরচ আগের তুলনায় বেশি। শিক্ষার্থী এর আগেও জোর করে বই কেনানোর অভিযোগ করেন। তখনও এরকম নোটিশ দিয়েছিলেন কলেজ কতৃপক্ষ।
এ বিষয়ে ঢাকা কমার্স কলেজের ফিনান্স বিভাগের শিক্ষক আকতার হোসেন বলেন, আমি ছাত্রদের তিনটি বইয়ের কথা বলেছি। এর মধ্য থেকে তারা যেকোনোটি পছন্দ করতে পারে। আমি কোনো বইয়ের ব্যাপারো কখনো কোন ছাত্রকে চাপ দেইনি।