এই গ্রীষ্মে আপনার আদরের বিড়ালকে ভাল রাখবে ঘরোয়া যেসব খাবার

ক্রমশ গরম বাড়ছে। এই গরমে আপনার বাড়ির পোষ্য বিড়ালকে নিয়ে চিন্তায় আছেন? ভাবছেন ওকে কী খেতে দেবেন? পশুচিকিৎসকরা বলে দিচ্ছেন এমনই কয়েকটি খাবারের নাম, যেগুলি এই গ্রীষ্মে আপনার আদরের বিড়ালকে ভাল রাখবে।
বিড়ালের জন্য প্যাকেট-জাত শুকনো খাবার পাওয়া যায়। চিকিৎসকের পরামর্শে সেই খাবার খাওয়াতে পারেন। কিন্তু এর বাইরে রয়েছে ঘরোয়া কিছু খাবার। যা আপনার বিড়ালকে ভাল রাখবে তীব্র গরমের সময়েও।
পালং শাক আর ভাত:
পালং শাক সিদ্ধ আর ভাত বিড়ালের জন্য খুব ভাল। পালংয়ে থাকা ভিটামিন বিড়ালের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। ১ ভাগ পালংয়ের সঙ্গে ৪ ভাগ ভাত মিশিয়ে ওকে খেতে দিন। দেওয়ার আগে জল মিশিয়ে একটু ভেজা ভেজা করে নিলে ভাল। তবে এই খাবার দেবেন কি না, তা চিকিৎসকের থেকে জেনে নিন ভাল করে। কারণ কিডনির সমস্যা আছে এমন বিড়ালের জন্য এই খাবার সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।
ডিম আর ভাত:
সিদ্ধ ডিম থেকে হলুদ অংশ বাদ দিয়ে শুধু সাদা অংশ থেঁতো করে গুঁড়িয়ে নিন। ভাতের সঙ্গে সেই ডিমের সাদা অংশ মিশিয়ে নিয়ে বিড়ালকে খেতে দিন। ডিমের প্রোটিন বিড়ালের পুষ্টির চাহিদা অনেকটা মেটাবে।
মাংসের জলের বরফ কিউব:
মুরগির মাংস সিদ্ধ করা জল বিড়ালের জন্য ভাল। তবে মনে রাখবেন, এতে নুন বা কোনও মশলা যেন না থাকে। এই জল ফ্রিজের আইস ট্রে-তে রেখে জমিয়ে নিন। জমে বরফের কিউব তৈরি হয়ে গেলে, তা আপনার বিড়ালকে দিন। এটা ওর পেটের জন্য ভাল, পুষ্টির জন্যও ভাল।
তরমুজের টুকরো:
তরমুজ বিড়ালের শরীরের জলের চাহিদা কিছুটা মেটায়। তবে প্রচুর পরিমাণে তরমুজ বিড়ালের ক্ষতি করতে পারে। তাই তরমুজ খাওয়ানোর আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। আরও একটা কথা মনে রাখতে হবে। তরমুজ দেওয়ার আগে তা থেকে বাদ দিতে হবে সব বীজ। এই বীজ বিড়ালের পেটের জন্য ক্ষতিকারক।
গরমে বিড়ালের যত্ন
বিড়ালের গায়ে অনেক লোম থাকায় গরমকালে বিড়ালের নানা ধরনের অসুবিধা হয়। এসময় হিটস্ট্রোক, ডায়রিয়া, পানিশূন্যতা ইত্যাদি বেশি হয়ে থাকে। আর তাই এ সময় বিড়ালের বাড়তি যত্নের প্রয়োজন হয়।
ঘুমানোর জায়গাঃ
একটা তোয়ালে ফ্রিজে রাখুন, ঠাণ্ডা হলে বিড়ালের বিছানায় বিছিয়ে দিন। ঘর ঠাণ্ডা রাখার জন্য এয়ারকন্ডিশন, কুলার, ফ্যান ইত্যাদি চালান এবং বিড়ালকে সে ঘরে রাখুন। যদি উঁচু বিল্ডিং এ বসবাস করেন তাহলে জানালা খুলে বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা করতে হবে। তবে অবশ্যই জানালায় নেট লাগিয়ে নিতে হবে।
খাওয়ার পানিঃ
সবসময় পরিষ্কার এবং ঠাণ্ডা পানি বিড়ালের খাওয়ার জন্য রেখে দিতে হবে। বিড়ালের খাবারের পানিতে বরফের টুকরো মিশিয়ে দিন। এতে পানি বেশিক্ষণ ঠাণ্ডা থাকবে।
খেলাধুলাঃ
এসময় বিড়ালকে খেলাধুলা কম করাতে হবে। উত্তেজিত হয়ে যায় এমন কোন খেলাধূলা করানো যাবে না।
বিশ্রামঃ
বেশিরভাগ সময় বিড়ালকে বিশ্রামে রাখুন। যদি নিয়মিত বাইরে হাঁটতে নিয়ে যান, তাহলে দীর্ঘসময় না হেঁটে কম সময় হাঁটবেন।
সূর্যের তাপঃ বিড়ালকে সূর্যের তাপ থেকে দূরে রাখতে হবে। তাই বেশিরভাগ সময় বিড়ালকে ঘরে রাখতে হবে।
Fleas এবং Ticks মুক্ত রাখাঃ
বিড়ালকে নিয়মিত grooming করতে হবে যাতে Fleas এবং Ticks এর আক্রমন থেকে বাঁচানো যায়। এদের কামড়ে জ্বলুনি এবং চামড়ার রোগ হয়।
বয়স্ক এবং স্থূলকায় বিড়ালঃ
বয়স্ক এবং স্থূলকায় বিড়ালের হিটস্ট্রোকের ঝুঁকি বেশি থাকে। সুতরাং এদের প্রতি বিশেষ যত্ন নেওয়া প্রয়োজন।
গরমে হটাৎ অসুস্থ হয়ে গেলেঃ একটি তোয়ালে ঠাণ্ডা পানিতে ভিজিয়ে বিড়ালের শরীর ও মাথা মুছে দিতে হবে। যদিও বিড়াল এটা পছন্দ করে না। তবে এটি বিড়ালকে দ্রুত ঠাণ্ডা করতে পারবে। পর্যাপ্ত পরিমানে পানি খেতে দিন এবং দ্রুত Vet এর সাথে যোগাযোগ করুন।